ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্ভীক জওয়ান। মাত্র সাত বছরের সেনাজীবনেই অর্জন করেছেন বহু গৌরব। বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে ছিলেন লং ডিস্ট্যান্স স্যুইমার। ৮১কিমি দূরত্বের বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সাঁতার প্রতিযোগিতায় একসময় টক্কর দিয়েছেন পৃথিবীর সেরা সাঁতারুদের, হয়েছেন তৃতীয়।

এখনই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর

সুরজিৎ কর্মকার

 

আমি সেনাবাহিনীতে কর্মরত। গত সাত বছরের কর্মজীবনে অনেক কিছু শিখেছি তার মধ্যে প্রথম হলো আত্মত্যাগ। নিজে থেকেই কেমন যেন ত্যাগ স্বীকার করাটা শিখে ফেলেছি। আগে কোন পূজা পার্বণ আসলেই আগে থেকেই কত পরিকল্পনা করতাম, কোথায় ঘুরতে যাব, কোন দিন কোন জামাটা পরবো । কিন্তু এখন আমার পুরো দুনিয়াটাই পাল্টে গেছে। আমার জগৎটাই যেন একটু আলাদা। এখন পূজা-পার্বণ, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এদের সবার থেকে বেশি মূল্যবান আমার কর্মস্থান। এখন আমার ভালোবাসা শুধু আমার গ্রাম কে জড়িয়ে নয়, আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে সীমিত নেই, কারণ আমি আমার দেশকে ভালবাসি, দেশবাসীকে ভালবাসি। তাই আমার প্রথম কাজ হলো দেশকে রক্ষা করা, দেশবাসীকে রক্ষা করা।

দেখতে দেখতে ২০১৯ পেরিয়ে নতুন বছর ২০২০ তে পা দিলাম। কিন্তু এই বছরটি যে শুরু থেকেই এত খারাপ যাবে তা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি ।শুধু আমাদের দেশ ভারতবর্ষ নয় গোটা পৃথিবীর সমস্ত দেশের মানুষ এক সংক্রমণকারী ভাইরাসের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছে। সেটি হলো Covid-19, এটা কে রোখার জন্য দেশের আইন ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনেকটাই কঠোর হয়েছে। ২১ শে মার্চ ২০২০ প্রথম ভারতবর্ষে লকডাউন শুরু হয় তারপর থেকে যাতায়াত ব্যবস্থা ও সাধারণ মানুষের কর্ম ব্যবস্থার ওপর প্রচুর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে যারা দিনমজুর তারা এই সময়ে সব থেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউনে প্রায় সব জায়গার কাজকর্ম বন্ধ আছে। সরকার অনেকভাবে সাধারণ মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। তবুও এখনো অনেক মানুষ দিনমজুর অসহায় মানুষ অনাহারে দিন কাটান।

সেনাবাহিনীতে থেকে তেমন কোনও বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। আমরাও আমাদের কর্মস্থানের আশেপাশের গরিব অসহায় মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছি, আর যথাসাধ্য সাহায্য করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো। মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। তাই এমতবস্থায় অনেক রকম সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আমরা অসহায় মানুষের সাহায্যে সদা তৎপর ।

আপনাদের সবার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আপনারাও আপনাদের সাধ্যমতো গরিব অসহায় মানুষের সাহায্য করুন। এখনই সময় মানুষের পাশে সাহায্যের ঢাল হয়ে দাঁড়ানোর। সেনাবাহিনীর সুরক্ষা বিধির নিয়ম অনুসারে আমি আমাদের বর্তমান দৈনিক জীবন যাপনের সম্বন্ধে বেশি কিছু বলতে পারছিনা। শেষে এটুকুই বলবো সবাই প্রশাসনের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধির সমস্ত নির্দেশ মেনে চলুন। নিজে সুস্থ থাকুন, নিজের পরিবারকে করোনা মুক্ত রাখুন।



Post a Comment from facebook

1 Comments

  1. ভালো লাগল। বেশ সহজ-সরল স্বীকারোক্তির মতো কথাগুলো বেরিয়ে এসেছে। অঙ্গিকার ও প্রার্থনা দুটো পার্ট। হয়তো এর বেশিকিছু বলা এঁদের আওতার মধ্যে আসে না চাকরিসূত্রের কারণে। ভালো থেকো ভাই।

    ReplyDelete

Post a Comment

Previous Post Next Post