এই পরিস্থিতি অনেক
নতুন সম্ভাবনাকে অচিরেই হত্যা করবে
আতিকুর রহমান
আমি আতিকুর রহমান।
মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা থানার বাসিন্দা। ছোট থেকেই আমি ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার সঙ্গে
যুক্ত ছিলাম। যদিও অ্যাথলেটিকস (রানিং ইভেন্ট) এর সঙ্গে যুক্ত হই দশম শ্রেণির ফাইনাল
পরীক্ষা দেওয়ার পর। প্রথম 400 মিটারে স্কুল ব্লকের খেলায় তৃতীয় স্থান পাই। এরপর
প্র্যাকটিসে মনোযোগ দিই।
2016 সালে মুর্শিদাবাদের
হয়ে রাজ্যস্তরে 200 মিটার দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করে ন্যাশনাল সেকশন পাই। ওখানে
সেমিফাইনালে ব্যর্থ হই। এরপর আমি মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে খেলা শুরু করি। এখন আমার মেন
ইভেন্ট 400 মিটার।
ওপেন রাজ্য স্তর মিটে 400
মিটার দৌড়ে প্রায় 35 বছর রেকর্ড রয়েছে
আমার নিজের কাকা গোলাম কিবরিয়ার। থাকেন শ্রীরামপুরে। 1986 সালে অনুষ্ঠিত রাজ্য স্তরের
খেলায় বহরমপুর স্কোয়ার ফিল্ডে আমার কাকা রেকর্ডটি করেছিলেন। টাইম করেছিলেন 48.1 সেকেন্ড।
আমি 2018 সালে কলকাতা যুবভারতী স্টেডিয়াম এর মাঠে রাজ্যস্তরের খেলায় টাইম করেছি
48.5 সেকেন্ড। কাকার রেকর্ড থেকে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি এবং এই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড
করার উদ্দেশ্যে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি।
কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাস এর মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে লকডাউন এর কারনে আমি ও আমার বন্ধুরা নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম দিকে প্র্যাকটিস একেবারে বন্ধ ছিল। আমি ও আমার বন্ধুরা এবং জেলার বিভিন্ন স্থানের খেলোয়াড়রা মুর্শিদাবাদ তরুণ সমিতি ক্লাবে প্র্যাকটিসের জন্য আসতাম। কিন্তু লকডাউন এর কারণে এই গ্রুপে প্র্যাকটিস একেবারেই বন্ধ রয়েছে।
এরপর লকডাউন কিছুটা
হালকা হওয়ার পর সামনে রাজ্যস্তরে প্রতিযোগিতা থাকায় আমি ও ক্লাবের সকল প্লেয়ার তাদের
কর্মক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্র্যাকটিস শুরু করি। আমি ও আমার আশেপাশের কয়েকজন বন্ধু
মিলে সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে সপ্তাহে 2-3 দিন খুব সকালে 5টা থেকে 7টার মধ্যে প্র্যাকটিস
করতাম। কিন্তু যে সকল খেলোয়াড়দের বাড়ির কাছে প্র্যাকটিসের জন্য মাঠ নেই তারা সমস্যায়
পড়েছে। ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন এর চলাচল স্বাভাবিক হলে সমস্ত প্লেয়ার নির্ধারিত
মাঠে আগের মত প্র্যাকটিস করতে আসতে পারবে।
করোনা ভাইরাস এর
এই ভয়ানক পরিস্থিতি তে দেশ-বিদেশে বন্ধ রাখা হয়েছে সমস্ত খেলা। ঘরে বসে রয়েছে সমস্ত
খেলোয়াড়রা। ভাইরাসের দাপট কিছুটা কমলে সমস্ত দেশ নানা ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করে
খেলাধুলা পুনরায় চালু করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ভাইরাসের দাপট না কমলে খেলাধুলা
চালু হবে না বলে আমার মনে হয়। কারণ এই পরিস্থিতিতে খেলাধুলা চালু করলে প্লেয়াররা
ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে ও সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। মাস্ক পরে তো আর খেলায় অংশ নেওয়া
যায় না!
এই ভাইরাসের সঙ্গে
লড়াই করতে হচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে। দিন দিন ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
আমাদের এলাকায় ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কম। লকডাউন শিথিল হয়েছে। মানুষ সোশ্যাল ডিসটেন্স
মেনে মাস্ক ব্যবহার করে হাটে বাজারে রাস্তায় চলাচল শুরু করেছে।
ভাইরাসের কারণে দেশজুড়ে
লকডাউন চলায় সমস্ত খেলা বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্র্যাকটিস। ফলে খেলোয়াড়রা তাদের
কর্মক্ষমতা (ফর্ম) হারাতে পারে। ফিটনেস হারিয়ে যাবে। ভাইরাসের প্রকোপ না কমলে হয়তো
আগের মতো আর খেলা পরিচালনা করা যাবে না। নানান
ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে খেলোয়াড়রা ও পরিচালকরা।
নতুন যারা খেলার
প্রতি আগ্রহী ভাইরাসের প্রকোপ না কমলে তারা হয়তো সেভাবে আর প্রাণ খুলে প্র্যাকটিস
করার সুযোগ পাবে না। পড়াশোনা করার জন্য যেমন শিক্ষক দরকার, সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে খেলাধুলা
করার জন্য একজন কোচের দরকার। তাই এই পরিস্থিতিতে নতুন প্লেয়ারদের কোচ এর পরিচালনায়
প্র্যাকটিস করার সুযোগ হবে না। এই পরিস্থিতিতে গ্রুপে প্র্যাকটিস বন্ধ থাকায় তারা হয়তো
তাদের সিনিয়রদের দেখে শেখার সুযোগ পাবে না। ফলে নতুন প্লেয়াররা একটু সমস্যার সম্মুখীন
হবে। ফলে এই লকডাউন পরিস্থিতি হয়ত অনেক নতুন সম্ভাবনাকে অচিরেই হত্যা করবে। এমনকি বিভিন্ন
স্তরের প্রতিযোগিতাগুলি কবে অনুষ্ঠিত হবে তার কোনও নিশ্চয়তা না থাকায় খেলোয়াড়রা অনুপ্রেরণা
হারাবে। ফলে খেলাধুলার প্রতি আকর্ষন কমে যেতে পারে এবং যুব সমাজের জন্য এই সময়টা একটা
চ্যালেঞ্জের সময়।
তবু আমরা আশা করে যাব। আশা করব একদিন প্রতিকূলতার মেঘ কেটে গিয়ে আশার আলো ফুটবে দিগন্তে..
Have a Great future bhai
ReplyDeleteVery well expressed the problems of present situatiobe. Wish you good luck for your bright future.
ReplyDeletePost a Comment